বিশ্বের দ্রুততম এবং ধীরগতির ইন্টারনেটের দেশগুলো

 

বিশ্বের দ্রুততম এবং ধীরগতির ইন্টারনেটের দেশগুলো

সাধারণত বিশ্বের ধনী দেশগুলো তাদের ডিজিটাল অবকাঠামোর উন্নয়নে যথেষ্ট অর্থ ব্যয় করার সক্ষমতা রাখে। যেমন- ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকা ধারাবাহিকভাবে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা পেয়ে থাকে। বিপরীতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সম্পদের অভাব এবং সীমিত বিনিয়োগের কারণে ধীরগতির ইন্টারনেট পেয়ে থাকে। যার ফলে দেশটিকে বরাবরই বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় লড়াই করতে হয়। রইল বিশ্বের দ্রুততম এবং ধীর গতির ইন্টারনেটের দেশগুলার তথ্য...

বিশ্বের দ্রুততম এবং ধীরগতির ইন্টারনেটের দেশগুলো

 

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১ দশমিক ১ বিলিয়নেরও বেশি স্পিড টেস্টের ভিত্তিতে বিশ্বের দ্রুততম ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটসহ দেশগুলোর তালিকা তৈরি করে সাইটটি। ‘ক্যাবল’-এর সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী গড় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গতি ৩২ দশমিক ১৩ এমবিপিএস (মেগাবিট প্রতি সেকেন্ড)। ইন্টারনেটের গতি তুলনাকারী ওয়েবসাইট ‘ক্যাবল’- এর প্রকাশিত তথ্য অনুসারে বিশ্বের দ্রুততম ইন্টারনেট সেবায় সেরা পাঁচ দেশ যথাক্রমে- লিচেনস্টাইন, ম্যাকাও, আইসল্যান্ড, এন্ডোরা এবং লুক্সেমবার্গ। তালিকায় আরও আছে- জাপান, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর এবং স্পেন। অন্যদিকে ধীরগতির ইন্টারনেট সেবার দেশগুলো হলো- আফগানিস্তান, ইয়েমেন, সিরিয়াম, পূর্ব তিমুর এবং নিরক্ষীয় গিনি। তালিকায় আরও আছে- বিসাউ, সোমালিয়া, ইথিওপিয়া, ইরিত্রিয়া এবং তাজিকিস্তান।

ইন্টারনেটের দ্রুতগতিসম্পন্ন ৫০টি দেশের মধ্যে ৩১টি ইউরোপে, সাতটি এশিয়ায়, পাঁচটি উত্তর আমেরিকায়, তিনটি দক্ষিণ আমেরিকায়, দুটি ওশেনিয়ায়, একটি আফ্রিকায় এবং একটি মধ্যপ্রাচ্যে রয়েছে। অন্যদিকে ৫০টি সবচেয়ে ধীরগতিসম্পন্ন ইন্টারনেটের দেশের মধ্যে ৩০টি আফ্রিকায় অবস্থিত। আফ্রিকার ৬৭টি দেশ বা অঞ্চলের গড় গতি ১০এমবিপিএস-এর নিচে। যা একটি সাধারণ পরিবার বা ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা মেটানোর জন্যও অক্ষম বলে বলে মনে করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক টেলিকম ওয়াচডগ প্রতিষ্ঠান ‘অফকম’।

 

পশ্চিম ইউরোপ :

তালিকায় শীর্ষে অবস্থান পশ্চিম ইউরোপের ২৮টি দেশের ইন্টারনেটের গতির জন্য গর্বিত। ১১৮.৬৯ এমবিপিএস আঞ্চলিক গড় গতি একে ১৩টি বৈশ্বিক অঞ্চলের মধ্যে দ্রুততম স্থানের স্বীকৃতি দিয়েছে। ইন্টারনেটের গতির বিচারে এই অঞ্চলের শীর্ষে অবস্থান করা দেশগুলো- জার্সি (২৬৪.৫২ এমবিপিএস), লিচেনস্টাইন (২৪৬.৭৬ এমবিপিএস)। অন্যদিকে তালিকায় নিম্ন থাকা দেশগুলো- ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জ (৪১.৯৭ এমবিপিএস), ডেনমার্ক (৪৯.৯৮এমবিপিএস) এবং অস্ট্রিয়া (৫৫.৮২ এমবিপিএস)।

 

উত্তর আমেরিকা :

উত্তর আমেরিকার পাঁচটি দেশ সমন্বিত আঞ্চলিক গড় গতির পরিমাণ ৯৪.০২ এমবিপিএস। যা অঞ্চলটিকে বিশ্বে অন্যদের চেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রেখেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (১৩৬.৪৮ এমবিপিএস), কানাডা (১৩৬.০৮ এমবিপিএস) এবং বারমুডা (৯৫.৫৮ এমবিপিএস) এই অঞ্চলের নেতৃত্ব দেয়; যেখানে গ্রিনল্যান্ড (৪১.১৯ এমবিপিএস), সেন্ট পিয়ের এবং মিকেলন (৬০.৭৭ এমবিপিএস) নিয়ে নিচের স্তরে রয়েছে।

 

বাল্টিক অঞ্চল :

বাল্টিক অঞ্চলের যোগ্যতা অর্জনকারী দেশগুলোর আঞ্চলিক গড় গতির পরিমাণ ৮০.০৯ এমবিপিএস। লিথুয়ানিয়া এক্ষেত্রে এগিয়ে (৮৭.০৯ এমবিপিএস), তারপরে লাটভিয়া (৬৬.৭৯ এমবিপিএস)।

 

পূর্ব ইউরোপ :

এই অঞ্চলে ১৬টি যোগ্যতা অর্জনকারী দেশ রয়েছে; যাদের সামগ্রিক গড় গতি ৬৭.৯২ এমবিপিএস। স্লোভাকিয়া (১৩৮.০৩ এমবিপিএস), রোমানিয়া (১০০.৬৬ এমবিপিএস), এবং উত্তর মেসিডোনিয়া (৯৭.৮৮ এমবিপিএস) শীর্ষ দেশ, যেখানে আলবেনিয়া (২৫.৩৬ এমবিপিএস) এবং ক্রোয়েশিয়া (২৫.৭২ এমবিপিএস) পিছিয়ে থাকা দেশ।

 

এশিয়া

এশিয়া (মধ্যপ্রাচ্য ব্যতীত) ২৭টি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করেছে; যার আঞ্চলিক গড় গতি ৪৫.৭২ এমবিপিএস। ম্যাকাও (২৩১.৪০ এমবিপিএস), তাইওয়ান (১৫৩.৫১ এমবিপিএস) এবং জাপান (১২৪.৭০ এমবিপিএস) সবচেয়ে উজ্জ্বল, যেখানে আফগানিস্তান (১.৭১ এমবিপিএস), পূর্ব তিমুর (২.৫০ এমবিপিএস) এবং পাকিস্তান (৫.৩২ এমবিপিএস) ধীরগতির প্রান্তে রয়েছে।

 

দক্ষিণ আমেরিকা

১৩টি দেশ অঞ্চলের ইন্টারনেটের প্রতিনিধিত্ব করে, দক্ষিণ আমেরিকা ৪৪.৩৮ এমবিপিএস নিয়ে তাদের আঞ্চলিক গতি বজায় রেখেছে। উরুগুয়ে (১১১.৪৬ এমবিপিএস), চিলি (৮৫.৪৯ এমবিপিএস) এবং ব্রাজিল (৭২.৭০ এমবিপিএস) এগিয়ে, যেখানে ভেনেজুয়েলা (১০.৯২ এমবিপিএস) এবং বলিভিয়া (১৬.০০ এমবিপিএস) ধীরগতি নিয়ে লড়াই করছে।

 

ক্যারিবিয়ান :

ক্যারিবিয়ান অঞ্চল তার দ্বীপ দেশগুলোর জন্য পরিচিত। তাদের সম্মিলিতভাবে ইন্টারনেটের গড় গতি ৩৮.৯৩ এমবিপিএস। কেম্যান দ্বীপপুঞ্জ (১২৫.০৮ এমবিপিএস), পুয়ের্তো রিকো (৯৬.৬৫ এমবিপিএস) এবং বার্বাডোস (৯৩.৫০ এমবিপিএস) নিয়ে এগিয়ে, যেখানে কিউবা (৪.১৪ এমবিপিএস), হাইতি (১০.৭৫ এমবিপিএস) নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।

 

মধ্য আমেরিকা :

বেশির ভাগ মধ্য আমেরিকার দেশগুলো নিজেদেরকে মধ্যম সারিতে খুঁজে পায়, এই অঞ্চলের গড় ৩২.৮৮ এমবিপিএস। পানামা (৫৬.৯৩ এমবিপিএস), কোস্টারিকা (৪২.৫১ এমবিপিএস) দ্রুততম গড় গতি প্রদর্শন করে, যেখানে গুয়াতেমালা (২৩.২৬ এমবিপিএস) এবং এল সালভাদর (২৩.৫৬ এমবিপিএস) তুলনামূলকভাবে ধীরগতির দেশ।

 

মধ্যপ্রাচ্য :

মধ্যপ্রাচ্যের ১৫টি দেশের গড় গতি ৩০.৪১ এমবিপিএসসহ মধ্য থেকে নিম্নস্তর দখল করে আছে। ইসরায়েল (৭৫.০৩ এমবিপিএস), কাতার (৫০.৬৮এমবিপিএস) নিয়ে এগিয়ে, যেখানে ইয়েমেন (১.৭৯ এমবিপিএস), সিরিয়া (২.৩০ এমবিপিএস) পিছিয়ে আছে।

 

ওশেনিয়া :

১৪টি যোগ্যতা অর্জনকারী দেশ সমন্বিত সামগ্রিক গড় গতি ২৫.৯৩ এমবিপিএস। নিউজিল্যান্ড (৯৭.০৯ এমবিপিএস), অস্ট্রেলিয়া (৫১.২৭ এমবিপিএস) শীর্ষ অবস্থানে আছে। যেখানে ভানুয়াতু (৬.৫৭ এমবিপিএস) অঞ্চলটির পিছিয়ে থাকা দেশ।

  সূত্র: ‘দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন’/পত্রিকা।

Previous Post Next Post
atOptions = { 'key' : 'ff715ba50c059c742bfea5af35b4aa55', 'format' : 'iframe', 'height' : 50, 'width' : 320, 'params' : {} };